দইয়ের পুষ্টিগুণ নষ্ট না করতে যা মানা জরুরি
ছবিঃ অনলাইন ডেস্ক
দইয়ের পুষ্টিগুণ নষ্ট না করতে যা মানা জরুরি
দই বাঙালির খাদ্যতালিকার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ভাতের পর, দুপুরের খাবারে কিংবা স্ন্যাকস হিসেবে—দই থাকে প্রায় সব আয়োজনেই। তবে শুধু স্বাদের জন্য নয়, এতে থাকা প্রোবায়োটিক বা উপকারী ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরের জন্য দারুণ উপকারী। তাই দইয়ের আসল স্বাস্থ্যগুণ পেতে হলে সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও ব্যবহার জানা জরুরি।
দইয়ের প্রধান স্বাস্থ্য উপকারিতা
১️⃣ হজমে সহায়তা:
দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক হজমতন্ত্রকে সক্রিয় রাখে, গ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
২️⃣ ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে:
প্রোটিনে ভরপুর ও ক্যালোরি কম থাকায় এটি ক্ষুধা দমন করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৩️⃣ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রোবায়োটিক একসঙ্গে কাজ করে শরীরকে নানা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
৪️⃣ ত্বক ও সৌন্দর্য রক্ষায় সহায়ক:
দইয়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়, ফলে ত্বক থাকে মসৃণ ও উজ্জ্বল।
৫️⃣ হাড় ও দাঁতের যত্নে:
দইয়ে থাকা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস হাড়কে শক্তিশালী করে এবং দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
⚠️ কেন দইয়ের প্রোবায়োটিক নষ্ট হয়?
প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া খুবই সংবেদনশীল। অতিরিক্ত তাপমাত্রা, আর্দ্রতা কিংবা অ্যাসিডের প্রভাবে এগুলো মারা যেতে পারে।
পুষ্টিবিদদের মতে, ল্যাকটোবেসিলাস ব্যাকটেরিয়া ৫০°C এর বেশি তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে না। তাই দই জমার সঙ্গে সঙ্গে ফ্রিজে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
🧊 দই সংরক্ষণের সঠিক পদ্ধতি
✅ দই জমে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ফ্রিজে রাখুন।
✅ সবসময় পরিষ্কার, শুকনো ও এয়ারটাইট পাত্র ব্যবহার করুন।
✅ ভেজা চামচ ব্যবহার করবেন না।
✅ ফ্রিজের মাঝের তাকেই রাখুন, দরজায় নয়।
✅ ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে দই খেয়ে ফেলা ভালো।
দইয়ের পুষ্টিগুণ নষ্ট না করতে যা মানা জরুরি
🚫 যেসব ভুলে দইয়ের উপকারিতা নষ্ট হয়
-
খোলা অবস্থায় বা ঢাকনা ছাড়া রাখা।
-
দই গরম করা বা রান্নায় অতিরিক্ত ব্যবহার করা।
-
দীর্ঘ সময় ঘরের বাইরে রেখে দেওয়া।
কোন পাত্রে দই রাখা সবচেয়ে ভালো?
-
মাটির হাঁড়ি: স্বাদ ও প্রোবায়োটিক দুটোই টিকিয়ে রাখে; প্রাকৃতিকভাবে ঠাণ্ডা রাখে।
-
গ্লাস বা স্টিল পাত্র: স্বাস্থ্যসম্মত ও দীর্ঘসময় ফ্রিজে রাখার জন্য নিরাপদ।
-
প্লাস্টিক কন্টেইনার: ব্যবহার সহজ হলেও তাপমাত্রা সমান থাকে না, তাই দীর্ঘমেয়াদে উপযুক্ত নয়।
বাড়িতে দই বানানোর সঠিক উপায়
১️⃣ দুধ হালকা গরম করুন (কিন্তু ফুটাবেন না)।
২️⃣ এক চামচ টক দই মিশিয়ে দিন।
৩️⃣ উষ্ণ স্থানে ৬–৮ ঘণ্টা রাখুন।
৪️⃣ দই জমে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ফ্রিজে রাখুন।
এভাবে তৈরি দইয়ে প্রোবায়োটিক জীবিত থাকে, অতিরিক্ত টক হয় না এবং স্বাদে মেলে ঘরোয়া টাটকা দইয়ের আসল মাধুর্য।
